১০৯ বছরের বৃদ্ধ। যেকোনো সময় মৃত্যু হতে পারে এই আশঙ্কায় কবর খুঁড়ে
তার পাশে বসে দিন কাটাচ্ছেন তিনি।ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের উত্তরপ্রদেশের
বড়বাঁকি জেলার।
আর এস’র এক প্রতিবেদনে জানা যায়, পরিবার-পরিজনদের ডেকে কবরের পাশে দিনভর বসেছিলেন বৃদ্ধ। পরেছিলেন কাফনও।
এভাবে বসে থাকার কারণ হিসেবে তিনি জানান, ফেরেশতারা তাকে জানিয়েছেন,
১টা বেজে ১০ মিনিটে তিনি মারা যাবেন। সেই কারণে বসে আছেন কবরের পাশে।
বৃদ্ধ নিজেই কাফন পরে বসে পড়েন কবরের পাশে। আর তা দেখতে ভিড় জমান
স্থানীয়রা। বিভিন্ন এলাকা থেকেও লোকজন আসেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে
পুলিশ। তারাও সেখানে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে শুরু করে। কিন্তু সময় পেরিয়ে
গেলেও ওই বৃদ্ধের কিছু হয়নি। তখন বৃদ্ধকে অনেক বুঝিয়ে বাড়ি পাঠান
পুলিশ।
মুহম্মদ শাফি নামের ওই বৃদ্ধ জানান, তিনি জানতে পেরেছিলেন যে, তিনি মারা
যাবেন ১টা বেজে ১০ মিনিটে। সেই কারণে আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়ে বসেছিলেন।
তিনি আরও জানান, বছর পাঁচেক আগেই তার মৃত্যুর কথা ছিল। কিন্তু সেবার তিনি মরেননি।
ইরানে জন্মগ্রহণকারী ইবনে সিনা ছিলেন মুসলিম দুনিয়া তথা বিশ্বের
একজন অগ্রণী বিজ্ঞানী, গবেষক ও দার্শনিক। তার পুরো নাম আবু আলি আল হুসেইন
ইন আবদুল্লাহ ইবন-সিনা। অবশ্য পাশ্চাত্যে তিনি পরিচিত আভিসিনাহ নামে। তার
ছিল বিভিন্ন বিষয়ে বিরল প্রতিভা। এককথায় পলিম্যাথ বা বহুবিদ্যাধর।
ইবনে সিনা ছিলেন একাধারে চিকিৎসাবিজ্ঞানী, জ্যোতির্বিজ্ঞানী, দার্শনিক।
বিভিন্ন বিষয়ে তিনি ৪৫০টি গবেষণাগ্রন্থ লিখেছিলেন। তার মধ্যে এখনও ২৪০টি
গ্রহ পাওয়া যায়।
ইবনে সিনাকে দুনিয়ার আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের জনকও বলা হয়। তার
সময়কাল ছিল ৯৮০-১০৩৭ খ্রিস্টাব্দ। যাঁদের প্রতিভার আলোকে বিজ্ঞান ও
গবেষণায় ইসলামি সোনালি যুগ উদ্ভাসিত হয়েছিল, তার মধ্যে ইবনে সিনা ছিলেন
অগ্রগণ্য। চিকিৎসাবিজ্ঞানে তার লেখা ৪০টি কিতাব রয়েছে। এগুলোর মধ্যে
বিশেষভাবে খ্যাত হল ‘দ্য বুক অফ হিলিং’ (আরোগ্য পুস্তক) ও ‘দ্য ক্যানন অফ
মেডিসিন’ (চিকিৎসাশাস্ত্র)।
ইবনে সিনা ধারণা করেছিলেন, কিছু রোগ নিশ্চিতভাবে মাইক্রোঅর্গানিজম
দ্বারাই ছড়ায়। তাই মানুষ থেকে মানুষে রোগ সংক্রমণ প্রতিহত করতে তিনি যে
ব্যবস্থা পত্রের কথা বলেছিলেন তা হচ্ছে, সংক্রমিত বা সন্দেহযুক্ত ব্যক্তিকে
৪০ দিন ধরে একেবারে আলাদা করে আইসোলেশনে অর্থাৎ, নির্জনে রাখতে হবে। আর এর
দ্বারাই সংক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। ইবনে সিনার এই ব্যবস্থাপত্রকে
আরবিতে বলা হয়, ‘আল আরবাইনিয়া’ (অর্থাৎ ৪০ দিন)।
১৩৪৭ সালের অক্টোবর মাস। কৃষ্ণসাগর থেকে
১২ টি জাহাজ সিসিলির মেসিনা বন্দরে নোঙ্গর করল। বন্দরের লোকজন জাহাজিদের
অভ্যর্থনা দিতে এসে সাংঘাতিক ভাবে চমকে গেলেন। সবগুলো জাহাজের বেশিরভাগ
লোকজন মরে পড়ে আছে! যারা মারা যায়নি তাদের অবস্থাও গুরুতর। পুরো শরীর থেকে
রক্ত ও পুঁজ গড়িয়ে পড়ছে। জানতে পেরে সিসিলি কর্তৃপক্ষ তাড়াতাড়ি জাহাজের এই
বহরকে বন্দর ত্যাগ করার নির্দেশ দেয়। কিন্তু ততক্ষণে ক্ষতি যা হওয়ার হয়ে
গেছে। ইউরোপে ঢুকে গেল বুবোনিক প্লেগ! ‘ব্ল্যাক ডেথ’ নামে পরিচিত এই
মহামারিকে মানবজাতির ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ বিপর্যয় হিসেবে ধরা হয়।
১৩৪৭-১৩৫০ পর্যন্ত চলা এই ধ্বংসযজ্ঞে পুরো ইউরোপের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ
মারা গিয়েছিল।
সিসিলির এই ঘটনায় শিক্ষা নিল ভেনিস শহর।
যদিও কিভাবে রোগ ছড়ায় সেই জ্ঞানের অভাব ছিল তাদের। তৎকালীন ভেনিস
নিয়ন্ত্রিত নগরী রাগুসা (বর্তমানে ক্রোয়েশিয়ায়) ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ
বন্দর।
কোনোভাবে প্লেগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে
১৩৭৭ সালে শহরের গ্রেট কাউন্সিল একটি আইন জারি করেন। আইনটিকে বলা হয়েছিল,
ত্রেনটিনো (trentino) বা ৩০ দিনের আইসোলেশন পিরিয়ড।
এই আইনটিতে ৪ টি আদেশ দেয়া হয় -
১. প্লেগ আক্রান্ত এলাকা থেকে আসা কোনো জাহাজ রাগুসা বন্দরে ভিড়তে পারবে না। এর আগে থাকতে হবে ১ মাসের আইসোলেশনে। ২. রাগুসা শহর থেকে কেউ জাহাজের ভেতরে যেতে পারবেনা। এরপরেও কেউ গেলে তাকেও শাস্তি স্বরূপ ১ মাস জাহাজে থাকতে হবে। ৩. কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া কেউ জাহাজে খাবার নিয়ে যেতে পারবেনা। গেলে আগের মতোই শাস্তি। ৪. উপরোক্ত আইন কেউ না মানলে তাকেও ১ মাসের আইসোলেশনে থাকতে হবে এবং জরিমানার মুখোমুখি হতে হবে।
বন্দরে ভিড়তে না দেয়ার এই আইনটি টিকে যায়।
পরবর্তী ৮০ বছরের মধ্যে ইতালির অন্যান্য কয়েকটি শহর যেমন- ভেনিস, পিসা,
জেনোয়া প্রভৃতিতেও trentino প্রয়োগ করা হতে থাকে। জীবাণুবাহিত রোগ সম্পর্কে
কোনো ধারণা না থাকলেও প্লেগের ভয়াবহতা শহরগুলোকে কঠিন পদক্ষেপ নিতে বাধ্য
করে।
তবে এই সময়ের মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য
পরিবর্তন হয়। ভেনিসের ব্যবসায়ীরা রোগ সংক্রমণ প্রতিরোধে ইবনে সিনার
উদ্ভাবিত সংক্রমিত ব্যক্তিকে ৪০ দিন ধরে আইসোলেশনে রাখার সফল পদ্ধতির কথা
শুনেছিলেন। তারা অর্জিত এই জ্ঞানকে বর্তমানের ইতালি ভূখণ্ডে নিয়ে যান।
তারা আরবি থেকে অনুবাদ করে ইতালিতে এই পদ্ধতিটির নামকরণ করেন
‘কোয়ারানটেনা’ (quarantena বা quarantino) (ইতালি ভাষায় ৪০ দিন)।
ইবনে সিনার ধারণা অনুযায়ী পরে ৩০ দিন থেকে
বাড়িয়ে আইসোলেশন পিরিয়ডের মেয়াদ করা হয় ৪০ দিন। এর সাথে আইনটির নাম
trentino থেকে পরিবর্তন করে quarantino বা quarantena (কোয়ারানটেনা) রাখা
হয়। এ শব্দটি আসে ইটালিয়ান quaranta থেকে, যার অর্থ চল্লিশ। তবে পরে এর
প্রচলিত অর্থ হয়- সঙ্গরোধ বা ব্যক্তিকে পৃথক করা। আর এ থেকেই ইংরেজি
‘কোয়ারেন্টাইন’ (quarantine) শব্দটির উদ্ভব।
আধুনিক পৃথিবীতে এই যে প্রণালীটি বৈশ্বিক – মহামারী রুখতে ব্যবহার করা হচ্ছে, তার শিকড় রয়েছে ইসলামি দুনিয়ায়।
৩০ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে না বলে জানিয়েছেন শিক্ষা
মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের (মাউশি) সচিব মো. মাহবুব
হোসেন। তিনি বলেন, সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ৩০ মার্চ
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত থাকলেও সেদিন শবে বরাতের ছুটি
ঘোষণা করা হয়েছে। এ কারণে সেদিন স্কুল-কলেজ খোলা হবে না।
আজ বুধবার গণমাধ্যমকে তিনি একথা জানান।
সচিব বলেন, বিষয়টি নিয়ে দু-একদিনের মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা
অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালকের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। ৩০ মার্চ ছুটি
ঘোষণা করে মাউশিকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে বলা হবে।