Showing posts with label প্রযুক্তিখবর. Show all posts
Showing posts with label প্রযুক্তিখবর. Show all posts

Sunday, April 18, 2021

‘কোয়ারেনটাইন’ শব্দের উদ্ভব ইবনে সিনার আইসোলেশন পদ্ধতি

‘কোয়ারেনটাইন’ শব্দের উদ্ভব ইবনে সিনার আইসোলেশন পদ্ধতি


 

ইরানে জন্মগ্রহণকারী ইবনে সিনা ছিলেন মুসলিম দুনিয়া তথা বিশ্বের একজন অগ্রণী বিজ্ঞানী, গবেষক ও দার্শনিক। তার পুরো নাম আবু আলি আল হুসেইন ইন আবদুল্লাহ ইবন-সিনা। অবশ্য পাশ্চাত্যে তিনি পরিচিত আভিসিনাহ নামে। তার ছিল বিভিন্ন বিষয়ে বিরল প্রতিভা। এককথায় পলিম্যাথ বা বহুবিদ্যাধর।

ইবনে সিনা ছিলেন একাধারে চিকিৎসাবিজ্ঞানী, জ্যোতির্বিজ্ঞানী, দার্শনিক। বিভিন্ন বিষয়ে তিনি ৪৫০টি গবেষণাগ্রন্থ লিখেছিলেন। তার মধ্যে এখনও ২৪০টি গ্রহ পাওয়া যায়।

ইবনে সিনাকে দুনিয়ার আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের জনকও বলা হয়। তার সময়কাল ছিল ৯৮০-১০৩৭ খ্রিস্টাব্দ। যাঁদের প্রতিভার আলোকে বিজ্ঞান ও গবেষণায় ইসলামি সোনালি যুগ উদ্ভাসিত হয়েছিল, তার মধ্যে ইবনে সিনা ছিলেন অগ্রগণ্য। চিকিৎসাবিজ্ঞানে তার লেখা ৪০টি কিতাব রয়েছে। এগুলোর মধ্যে বিশেষভাবে খ্যাত হল ‘দ্য বুক অফ হিলিং’ (আরোগ্য পুস্তক) ও ‘দ্য ক্যানন অফ মেডিসিন’ (চিকিৎসাশাস্ত্র)।

ইবনে সিনা ধারণা করেছিলেন, কিছু রোগ নিশ্চিতভাবে মাইক্রোঅর্গানিজম দ্বারাই ছড়ায়। তাই মানুষ থেকে মানুষে রোগ সংক্রমণ প্রতিহত করতে তিনি যে ব্যবস্থা পত্রের কথা বলেছিলেন তা হচ্ছে, সংক্রমিত বা সন্দেহযুক্ত ব্যক্তিকে ৪০ দিন ধরে একেবারে আলাদা করে আইসোলেশনে অর্থাৎ, নির্জনে রাখতে হবে। আর এর দ্বারাই সংক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। ইবনে সিনার এই ব্যবস্থাপত্রকে আরবিতে বলা হয়, ‘আল আরবাইনিয়া’ (অর্থাৎ ৪০ দিন)।

মাল্টা' কোয়ারেন্টাইনে থাকা শহরের চিত্র  © J. Goupy/Wellcome collection

১৩৪৭ সালের অক্টোবর মাস। কৃষ্ণসাগর থেকে ১২ টি জাহাজ সিসিলির মেসিনা বন্দরে নোঙ্গর করল। বন্দরের লোকজন জাহাজিদের অভ্যর্থনা দিতে এসে সাংঘাতিক ভাবে চমকে গেলেন। সবগুলো জাহাজের বেশিরভাগ লোকজন মরে পড়ে আছে! যারা মারা যায়নি তাদের অবস্থাও গুরুতর। পুরো শরীর থেকে রক্ত ও পুঁজ গড়িয়ে পড়ছে। জানতে পেরে সিসিলি কর্তৃপক্ষ তাড়াতাড়ি জাহাজের এই বহরকে বন্দর ত্যাগ করার নির্দেশ দেয়। কিন্তু ততক্ষণে ক্ষতি যা হওয়ার হয়ে গেছে। ইউরোপে ঢুকে গেল বুবোনিক প্লেগ! ‘ব্ল্যাক ডেথ’ নামে পরিচিত এই মহামারিকে মানবজাতির ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ বিপর্যয় হিসেবে ধরা হয়। ১৩৪৭-১৩৫০ পর্যন্ত চলা এই ধ্বংসযজ্ঞে পুরো ইউরোপের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ মারা গিয়েছিল।

সিসিলির এই ঘটনায় শিক্ষা নিল ভেনিস শহর। যদিও কিভাবে রোগ ছড়ায় সেই জ্ঞানের অভাব ছিল তাদের। তৎকালীন ভেনিস নিয়ন্ত্রিত নগরী রাগুসা (বর্তমানে ক্রোয়েশিয়ায়) ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বন্দর।

কোনোভাবে প্লেগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে ১৩৭৭ সালে শহরের গ্রেট কাউন্সিল একটি আইন জারি করেন। আইনটিকে বলা হয়েছিল, ত্রেনটিনো (trentino) বা ৩০ দিনের আইসোলেশন পিরিয়ড।

এই আইনটিতে ৪ টি আদেশ দেয়া হয় -

১. প্লেগ আক্রান্ত এলাকা থেকে আসা কোনো জাহাজ রাগুসা বন্দরে ভিড়তে পারবে না। এর আগে থাকতে হবে ১ মাসের আইসোলেশনে।
২. রাগুসা শহর থেকে কেউ জাহাজের ভেতরে যেতে পারবেনা। এরপরেও কেউ গেলে তাকেও শাস্তি স্বরূপ ১ মাস জাহাজে থাকতে হবে।
৩. কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া কেউ জাহাজে খাবার নিয়ে যেতে পারবেনা। গেলে আগের মতোই শাস্তি।
৪. উপরোক্ত আইন কেউ না মানলে তাকেও ১ মাসের আইসোলেশনে থাকতে হবে এবং জরিমানার মুখোমুখি হতে হবে।

মা ও শিশু জেটিতে দাঁড়িয়ে দেখছেন কোয়ারেন্টিনে থাকা জাহাজ  © Francesco Gioli 1897/ Getty Images

বন্দরে ভিড়তে না দেয়ার এই আইনটি টিকে যায়। পরবর্তী ৮০ বছরের মধ্যে ইতালির অন্যান্য কয়েকটি শহর যেমন- ভেনিস, পিসা, জেনোয়া প্রভৃতিতেও trentino প্রয়োগ করা হতে থাকে। জীবাণুবাহিত রোগ সম্পর্কে কোনো ধারণা না থাকলেও প্লেগের ভয়াবহতা শহরগুলোকে কঠিন পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করে।

তবে এই সময়ের মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়। ভেনিসের ব্যবসায়ীরা রোগ সংক্রমণ প্রতিরোধে ইবনে সিনার উদ্ভাবিত সংক্রমিত ব্যক্তিকে ৪০ দিন ধরে আইসোলেশনে রাখার সফল পদ্ধতির কথা শুনেছিলেন। তারা অর্জিত এই জ্ঞানকে বর্তমানের ইতালি ভূখণ্ডে নিয়ে যান। তারা আরবি থেকে অনুবাদ করে ইতালিতে এই পদ্ধতিটির নামকরণ করেন ‘কোয়ারানটেনা’ (quarantena বা quarantino) (ইতালি ভাষায় ৪০ দিন)।

ইবনে সিনার ধারণা অনুযায়ী পরে ৩০ দিন থেকে বাড়িয়ে আইসোলেশন পিরিয়ডের মেয়াদ করা হয় ৪০ দিন। এর সাথে আইনটির নাম trentino থেকে পরিবর্তন করে quarantino বা quarantena (কোয়ারানটেনা) রাখা হয়। এ শব্দটি আসে ইটালিয়ান quaranta থেকে, যার অর্থ চল্লিশ। তবে পরে এর প্রচলিত অর্থ হয়- সঙ্গরোধ বা ব্যক্তিকে পৃথক করা। আর এ থেকেই ইংরেজি ‘কোয়ারেন্টাইন’ (quarantine) শব্দটির উদ্ভব।

আধুনিক পৃথিবীতে এই যে প্রণালীটি বৈশ্বিক – মহামারী রুখতে ব্যবহার করা হচ্ছে, তার শিকড় রয়েছে ইসলামি দুনিয়ায়।

সূত্র : টিডিএন বাংলা, রোয়ার।

হ্যাকিংয়ের ফাঁদে প্রবাসীরা

হ্যাকিংয়ের ফাঁদে প্রবাসীরা

 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে  হ্যাকিং বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে প্রবাসীরা ইমো, হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাকিংয়ের ফাঁদে পড়ে ভুক্তভোগী হচ্ছেন বেশি। এসব প্রবাসীর বিভিন্ন অফিস বা কোম্পানি থেকে লটারি বিজয়ী হয়েছে অথবা সমস্যার কথা বলে ফোন করে মোবাইলের মেসেজের পাসওয়ার্ড নম্বর চাওয়া হয়। আবার বিভিন্ন গ্রুপ নম্বর অ্যাড করে বারবার গ্রুপে ফোন করে বিরক্ত করা হয় বা গ্রুপে আপত্তিকর ছবি ভিডিও পাঠানো হয়। গ্রুপ না থাকতে চাইলেও বারবার গ্রুপে যুক্ত করা হয়।

নব্বই দশকে যখন ইন্টারনেট বা তথ্য প্রযুক্তি এতটা প্রচলন ছিল না, সেই সময়ে কাগজে লিখে প্রিয়জনকে চিঠি বা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য লিখে ডাকযোগে পাঠাতে হতো। বিদেশ থেকে প্রবাসীরা লোক মারফত ছাড়া ডাকযোগে চিঠি পাঠালে সেটা হাতে পেতে ১৫ দিন থেকে ১ মাস সময় লাগত। বর্তমানে উন্নত তথ্য প্রযুক্তি ও ইন্টারনেট সেবা সহজ হওয়ায় সময়ের সঙ্গে পরিবর্তন হয়ে গেছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। পরিবার, আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে ব্যবহার করে বিভিন্ন অ্যাপস ইমো, হোয়াটসঅ্যাপ, ভাইবার, স্কাইপসহ অনেক অ্যাপস। সহজে মোবাইলে ইমো চালু করা এবং নম্বর অ্যাড করতে ঝামেলা কম হওয়ায় বেশির ভাগ মানুষ ইমো ব্যবহার করে। এক মোবাইল নম্বর দিয়ে একাধিক মোবাইলে ইমো চালু বা ব্যবহার করা যায়। যার কারণে কিছু কুচক্রী মহল সমাজে বা কমিউনিটির মধ্যে পরিচিত ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে থাকে। অনেকেই যারা গ্রুপ থেকে কীভাবে সরে যেতে হয় জানেন না। এই রকম ইমো গ্রুপে হ্যাকিংকারী চক্রের সদস্যরা গ্রুপ বাদ দেওয়ার কথা বলে কৌশলে টার্গেট করা ব্যক্তির মোবাইলের মেসেজের নম্বরটা দিতে বলে। এভাবে ইমো, হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাকিংয়ে ঝুঁকি বেশি। আবার অপরিচিত কাউকে মোবাইল দিলে অথবা দেখা যায় অনেকেই বেখয়ালি বা কাজের চাপে মোবাইলে এক স্থানে রেখে ব্যস্ত হয়ে যান অন্য কাজে। আর এই সুযোগে কুচক্রী হ্যাকার মোবাইলের মেসেজের পিন পাসওয়ার্ড নিয়ে ইমো হ্যাক করে। এরপর হ্যাকাররা পরিচিত-অপরিচিত নম্বরে বিভিন্ন অজুহাত ও বিপদের কথা বলে টাকা হাতিয়ে নেয়।

 


ইমো হ্যাকারের শিকার কুয়েত প্রবাসী আবদুস সাত্তারের মোবাইলে ফোন আসে হঠাৎ। পরিচিত মনে করে এই প্রবাসী নিজের মোবাইলের মেসেজে আসা পিন পাসওয়ার্ড বলে দেন। এরপর নিজ কাজে কর্মে ব্যস্ত হয়ে যান। এই ফাঁকে ইমো হ্যাক করে তার এক বন্ধু জসিম উদ্দিনকে ফোন করে দেশে জরুরি ৫ হাজার টাকা বিকাশ করতে বলেন ওই হ্যাকার। জসিম টাকা পাঠিয়ে দেয় সেই নম্বরে। হ্যাকার পরে আবার অন্য আরেক নম্বরে বিকাশে টাকা পাঠাতে বললে তখন জসিমের সন্দেহ হয়। সঙ্গে সঙ্গে সাত্তারকে বিষয়টা জানালে সে বলে, এই ব্যাপারে সে কিছুই জানেন না।

সাত্তার তখন বন্ধুকে জানায়, কিছুক্ষণ আগে তাকে একটা নম্বর থেকে ফোন করে মোবাইলের মেসেজের নম্বর চাইল। পরে বুঝতে পারেন তার ইমো হ্যাক হয়েছে। প্রতিদিন এভাবে প্রবাসীদের ফোন আসে অনেক সময় বলে লটারিতে বিজয়ী হয়েছে ইত্যাদি বলে ইমো, হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাকারের ফাঁদে পড়েন।

ইমো, হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাকিং থেকে বাঁচতে সর্তক হতে হবে। অপরিচিত কাউকে মোবাইল দেওয়া যাবে না। অপরিচিত কাউকে কোনো অজুহাতে নিজের মোবাইলের মেসেজের পিন বা পাসওয়ার্ড জানতে চাইলে না দেওয়ার বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

Monday, April 12, 2021

১৬ হাজার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিল ফেসবুক

১৬ হাজার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিল ফেসবুক

 


অনলাইন ডেস্ক ॥ পণ্যের ভুয়া রিভিও কেনা বেচার দায়ে ১৬ হাজার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছে ফেসবুক। ওই সব অ্যাকাউন্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন পণ্যের নজরকাড়া ও চটকদার রিভিও দেয়। যা দেখে সত্যিকারের ক্রেতারা বিভ্রান্ত হয়ে পরে।

যুক্তরাজ্যের বাজার প্রতিযোগিতা তদারককারী কর্তৃপক্ষের (সিএমএ) নজরদারী ও হস্তক্ষেপের ফলে ফেসবুক এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়।

ফেসবুক জানিয়েছে, তারা ফেসবুক ও ইনষ্টাগ্রামের পেইড কনটেন্টের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নীতিমালায় কিছু পরিবর্তন নিয়ে আসছে। যেসব পেইড কনটেন্ট ব্যবহারকারীদেরকে বিভ্রান্ত করবে এবং প্রতারিত করতে প্রলুব্ধ করতে সেগুলো ফেসবুক ও ইনষ্টাগ্রাম থেকে সরিয়ে দেয়া হবে।

ভার্চুয়াল বাজার স্থিতিশীল রাখতে যুক্তরাজ্যের বাজার প্রতিযোগিতা তদারককারী কর্তৃপক্ষ (সিএমএ) এবং ফেসবুক যৌথভাবে ২০১৯ সালে কাজ শুরু করে। এর আগে অবশ্য ২০১৮ সালে ভুয়া রিভিওর বিষয়টি নজরে এনে ইবে এবং ফেসবুককে চিঠি দিয়েছিলো সিএমএ। তারপর থেকেই ভুয়া রিভিওর বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছে ফেসবুক।

গত বছরও ফেসবুক একই অভিযোগে অভিযুক্ত ১৮৮টি গ্রুপ ও ২৪টি অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছিল।

সূত্র: রয়টার্স